শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

ভারত থেকে অবাধে ঢুকছে পানি -পাকিস্তানে বন্যায় নিহত ৪৩, পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখ ৬০ হাজারে। এর মধ্যে প্রায় ১২ লাখ ৯০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পাঞ্জাবের ত্রাণ কমিশনার নাবিল জাভেদ জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকাগুলোতে ৪০০র বেশি ত্রাণ ও চিকিৎসা শিবির এবং ৩৮৫টি পশুচিকিৎসা শিবির খোলা হয়েছে। এছাড়া প্রায় আট লাখ গবাদি পশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ভারত থেকে ঢুকছে পানি

পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) জানিয়েছে, কাশ্মীর ও ভারতের ভেতর থেকে আসা বন্যার পানি দ্রুত পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।

এনডিএমএ জানায়, ভারতের হিমাচল প্রদেশে শতদ্রু নদীর উজানে দুটি বাঁধ পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত পানি বিয়াস ও শতদ্রু নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে। বিয়াস নদীতে প্রবাহ বর্তমানে এক লাখ কিউসেক ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে ৫০ থেকে ৮০ হাজার কিউসেক পানি পাকিস্তানের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে।

হারিকি হাইড্রলিক স্ট্রাকচারে প্রবাহ এখন তিন লাখ কিউসেক। এখানকার পানি প্রবাহিত হয়ে কাসুর জেলার গণ্ডা সিং ওয়ালায় পৌঁছায়। সেখানে অতিমাত্রার বন্যা দেখা দিয়েছে।

এনডিএমএ আরও জানায়, ভারতশাসিত কাশ্মীরের রাভি নদীর উজানে অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বাঁধ পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখান থেকে এক লাখ কিউসেক পানির ঢল পাকিস্তানে ধেয়ে যাচ্ছে।

আগামী ৪ সেপ্টেম্বর শতদ্রু, চেনাব, রাভি ও ঝিলম নদীর পানি মিলিত হয়ে পাঞ্জনাদের আশপাশের (বাহাওয়ালপুর, রাজনপুর ও মুজাফফরগড়) এলাকায় ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।

সিন্ধুতে নতুন ঝুঁকি

এনডিএমএ আরও জানিয়েছে, আগামী ৬-১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতের দিক থেকে একটি নিম্নচাপ প্রবেশ করে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে ভারী বৃষ্টি ও বজ্রঝড় ঘটাতে পারে। এতে থরপারকার, সাজাওয়াল, ঠাট্টা, বাদিন ও মীরপুরখাস জেলায় প্রবল বর্ষণের শঙ্কা রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩০০ গ্রাম

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, রাভি, শতদ্রু ও চেনাব নদীর পানিতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০০টির বেশি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৪৩ হলেও বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র: ডন
কেএএ/

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved bijoykantho© 2025